লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন : দ্রুত সমাধান চাই
- আপলোড সময় : ২৩-১০-২০২৫ ০৭:৪৬:০৭ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৩-১০-২০২৫ ০৭:৪৬:০৭ পূর্বাহ্ন
বিদ্যুতের সংকট এখন জনজীবনের নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে সুনামগঞ্জ জেলায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন ১২টি উপজেলার মানুষ আজ চরম ভোগান্তিতে। প্রতিদিন গড়ে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিংয়ে যেন এক নিপীড়ন! ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়া এখন এমন নিয়মে পরিণত হয়েছে, যার ব্যতিক্রম খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
রাতের পর রাত অন্ধকারে কাটছে শিক্ষার্থীদের সময়। সামনে বার্ষিক পরীক্ষা, অথচ সন্ধ্যার পর পড়ার টেবিলে আলো নেই। শহর থেকে গ্রাম-সবখানে একই চিত্র। দিনের বেলাতেও বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষ অসহনীয় গরমে দিশেহারা। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, চালকল মালিক, স্টেশনারি দোকানদার, খামারি, এমনকি সাধারণ চা দোকানদার পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংকটে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তথ্যানুযায়ী, সুনামগঞ্জে প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার গ্রাহকের চাহিদা ৭০-৭৫ মেগাওয়াট, কিন্তু সরবরাহ হচ্ছে মাত্র ৩৫-৪০ মেগাওয়াট। অর্থাৎ প্রায় অর্ধেক ঘাটতি! জাতীয়ভাবে উৎপাদন কমে যাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে স্থানীয় পর্যায়ের দুর্ভোগকে যেন কেউ গুরুত্ব দিচ্ছে না। অথচ এই বিদ্যুৎ সংকট শুধু একটি প্রযুক্তিগত সমস্যা নয়, এটি এখন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক সংকটে রূপ নিয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ বারবার “জাতীয় উৎপাদন কম” বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো- বছরের পর বছর হাজার কোটি টাকার প্রকল্প, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, ভর্তুকি ও ‘লোডশেডিংমুক্ত বাংলাদেশ’-এর প্রতিশ্রুতিগুলো কোথায় হারিয়ে গেল? কেন এখনো বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় এমন দুর্বলতা?
এখন প্রয়োজন দায়সারা বক্তব্য নয়, প্রয়োজন কার্যকর পদক্ষেপ। জনগণ বিদ্যুতের অনুদান চায় না, তারা চায় ন্যায্য অধিকার - নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ। সরকার যদি দ্রুত বাস্তব পদক্ষেপ না নেয়, তবে এই বিদ্যুৎ সংকট কেবল অর্থনীতিকেই নয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবনের স্থিতিশীলতাকেও ভেঙে দেবে। বিদ্যুৎ উন্নয়নের নামে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, এখন সময় এসেছে তার জবাবদিহি করার।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ

সম্পাদকীয়